রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

বেনিয়োগ-Poem by Md Kamaluddin.

বেনিয়োগ-সাম্প্রতিককালের ঘটনা আলেক্ষে একটি কবিতা।


বেনিয়োগ-

বৃষ্টির ঝাঁটে দাওয়া 
ভেজা চৌকাঠ। 
মেঝেতে বিমর্ষ মা 
চিথপাত অকস্মাৎ। 
আধ্ পেটা নুন ভাত।  
বেঁচে থাকার ন্যূনতম সংস্থান।  
এক সাথে অভাব, 
দুশ্চিন্তার অবস্থান। 
কাত হয়ে চলা, 
পালতোলা তরী যেন, 
কখন ডুবে যায় হেন। 
সামনে হতাশার কিচির-মিচির, 
বাবা বেচারা হারাধন মানুষ বড় মাটির। জওয়াল কাঁধে বলদ জোড়ার সাথে, 
মাটি কেটে যায় দিন রাতে। 
মজুরি খাটে, ছেলের লেখা পড়ায়, 
একদিন হাসাবে পৃথিবী সে আশায়। 
কোন একদিন আসিবে সুখের দিন, 
বাজিবে হতভাগ্য কুটিরে উল্লাস বীণ।
এলো সুখবর চাকরিটা পেলে ধনা মিত্তির বড় সাধনায় এক করে দিন রাত্রির. 
স্কুলে যাবে সে পরমপ্রাপ্তি ,
ঘর হতে অভাবের বিদায় চির শান্তি। 
পাতাটা উল্টে দেখি, 
আরো অনেক ভয়ানক কথা।  
প্রতিহারা নির্মলার যন্ত্রণার ব্যথা। 
তিনটি সন্তান নিয়ে, 
রাস্তার পাশে ফুচকার দোকান দিয়ে। বেঁধেছিল ভাঙ্গা ঘর, 
লড়াই অক্লান্ত বেঁচে উঠবার।
বিচারের নামে প্রহসন- 
তত্ত্ব কথাই বলে। 
ঠগ বাঁচতে গা উজার, 
পঁচিশ হাজারো চাকরে বেকার। 
কর্ম গেল অস্তাচলে। 
মিথ্যা, প্রবঞ্চনা, ছলনার কোলাহলে।
কর্তা মশাই বলছে বটে। 
চাকরি হয়েছে চুরি। 
প্রশ্ন সেথায়- 
চোর যদি না থাকে দুনিয়ায়।
তবে কি দশচক্রে ভগবান ভূত 
স্বয়ং চাকরি লয়েছে হরি।
পাইক, বরকন্দাজ, সেনা, সেপাই- 
এতকিছু রাখিয়াছো পাহারায়। 
সবে কি ঘুমায় নাকে তেল দিয়ে? 
তাদের হোক হিসাব কেন করেছে অন্যায়?  তবে কেন এমন গড়া পেটা বিচার?
হে প্রভু তাদেরই শাস্তি বিধান হোক তব ধর্ম অর্থবানের বখাটে ছেলে স্থুলিত কভু তাই বলে সকলেই পেল সাজা 
তস্কর মহানুভবে সবই তো তোমার  প্রজা 
ধর্মের কল বাতাসে নড়ে-
বিভেদ করুক মহানুভবে তস্করে 
তোমার বিচার আজি অসমীচীন, 
যদি না সে ধরিতে পারে অকর্মণ্যহীন. 
একবার ভেবে দেখো 
প্রতিটি পাতায় 
চোখের জলে লেখা আছে 
কত কাহিনী না বলা কথায়। 
ভরসা তোমাতেই প্রেরণা।
বিধির বিধানে, 
সত্য অসত্যের খতিয়ান।  
শাস্তি তস্করে পুরস্কার মহিয়ানে।

-----------------------
কলমে মোঃ কামাল উদ্দিন।
-----------------------

বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫

বিষাক্ত পৃথ্বী-Poem by Md Kamaluddin.

বিষাক্ত পৃথ্বী-পরিবেশ চেতনার কবিতা।



বিষাক্ত পৃথ্বী-

বহু বছর আগে, 
ভোরের পাখি উঠত জেগে|
কৃষক লাঙ্গল কাঁধে, 
জোড়া বলদ বাঁধে, 
গামছা গলায় আদুল গায়ে, 
পাগড়ি মাথায় খালি পায়ে| 
সবুজ ঘাসের আলতো ছোঁয়ায় 
নীল আকাশে, 
শুভ্র সকাল মৃদু হাওয়ায়, 
চলেছে আলপথ ধরে। 
মিলছে না সেই দেখাটা 
অনেক বছর পরে। 


আজ সকালে ক্লান্ত পাখি, 
ঘুম চোখে তার ডাকাডাকি, 
হাঁই তুলেছে কালো পবন| 
স্থবির প্রাণ চাইছে ত্বরণ| 
বিষের বাঁশি- 
প্রাণ নিয়েছে রাশি রাশি,
নাম দিল তার করোনা প্রবাসী। 
বাঁচার নেইকো পথ সেথায়, 
মানুষ বড় অসহায়| 
কলের মজুর মরছে সেথায়। 
নাম দিল যে পরিযায়ী।
অনেকে মলো পথের পরে,
জীবন হলো ধরাশায়ী। 
বিদ্যে মশাই দিলেন- বিধান| 
ঘর ছেড়ে যাই কার ই সাধন।
পুঁজি পতির লোভ লালসায়, 
বিশানলে দেশ ছেয়ে যায়| 
ঘর আটকের পথ যে কোথায়| 
ঘরের কোনে, 
উঁকিঝুঁকি মারছে তারা,
বাইরে আকাশ বিষাদ ভরা| 
পেটের খাবার জুটছে না তার। 
সবখানেতেই মারকাটারি হাহাকার| 
সবার নাকি মুখোশ গোঁজা| 
বাঁচা তখন নয়কো সোজা,
সন্তর্পনে দিচ্ছে দাওয়াই,
মানুষ যখন অসহায়| 
বিষ পানেতে মিলছে রেহায়|
বাঁচা কি মরার-
এক ই মন্ত্র।
মানুষ মারার যন্ত্র।
 
দুধের শিশু কাঁদছে আজি, 
নিথর মায়ের বুকে।
সবাই তখন অসহায়।
রক্ষা করে কেই বা কাকে।
মুক্ত আকাশ গরল করি পান| 
নীলকন্ঠ ও মন্থনে পিছু টান। 


কারখানার ই ধুলোবালি|
জলের সাথে অম্ল কালি।
প্রাণ খোলা মুক্ত ভুবন, 
ধোঁয়ায় যেন হচ্ছে কালি| 
বিশ্ব আজি, বিষম তাপনশীল| 
শপথ হোক- 
নির্মলেতে বিশ্ব অনাবিল। 
ঘরের পাশে একটি বৃক্ষ, 
হউক শপথ দীক্ষ।
বপন করি আপন হাতে| 
বিশ্ব হাসুক সবার সাথে| 
সবুজ জগত তোমার হাতে, 
শপথ করি দিনে রাতে| 

আবার অনেক বছর পরে, 
অনেক বছর ধরে, 
আগামীর উচ্ছ্বাস, 
নির্মলতার আধারে|  
কৃষক শুভ্র সকালে, 
ক্ষেতের পারে, 
বলদ জোড়া বাঁধে, 
লাঙ্গল পাচন কাঁধে, 
হরীত আলের বাঁকে, 
যেন সোঁদা গন্ধ শোকে|
নীল আকাশের কোলে, 
কাক কোকিলের বোলে| 
গাইতে পারে-সবুজ আমার গাঁ| 
তোমার কোলে, 
আরাম পেলাম, 
ও ধরিত্রী মা|

-----------------------------------------

কলমে: কবি-মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন|

-----------------------------------------
সাহিত্য লহরীতে আপনাদের সকলকে স্বাগতম।
-----------------------------------------

মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, ২০২৫

রাবণ পৌরুষ-Poem by Md Kamaluddin.

রাবণ পৌরুষ-ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব গাঁথা।




রাবণ পৌরুষ-


আভিজাত্য, দর্প, দায়িত্ব- 
দেখি হে রাবনেই পৌরুষত্ব। 
রাক্ষস কহিল তারে দেবালয়, 
রাম নামে আজ্ঞা মহাশয়।
সন্তান যাঁচি হে প্রভু রাবণসম, 
যে সন্তান মাতৃ আশু করিবে প্রশম। 
চাহিছি রাবণ রূপে ভ্রাতা, 
হইবে যে বোনের বিপদে ত্রাতা। 
এক সাধক চাই রাবণের মতো, 
ধ্যানে ব্রতী, মনপ্রাণ দিয়ে। 
রাজা চায় সুশাসক রাবণের মতো, 
সাজাইবে রাজ্যপাট কনক দিয়ে। 
স্বামী হোক রাবণের মতো, 
স্ত্রীর অতীত জেনেও- 
স্বামিত্বের দায়ভারে ব্রত। 
পিতৃত্ব হোক রাবণের মতো, 
স্নেহ ভরা জনক হাজার সমস্যায়, 
হার না মানা পিতৃ দেব মহাশয়। 
স্লেশহীন, মুখে হাসি পরম আত্মায়। 

একটা পুরুষ চাই যেন রাবণ। 
যার অঙ্গীকার অলাঞ্ছিত অপহরণ। 
মানসিংহ, নারীত্বে সসম্মান 
শরীরে নাহি অবলোকন, 
অকলুষিত আমার সম্মান। 
কাটুক রাজবন্দী আসনে জীবন আমার,
ফলাবে না মিথ্যে সুপুরুষের অহংকার।

তোমরা রামকে পূজা কর, 
এমন পুরুষ চাইনা আমার। 
দেখনধারী ভালোবাসায় ন্যাস্ত আছে, 
স্ত্রী মূল্যহীন তার কাছে। 
অগ্নিপরীক্ষা যে চাই স্ত্রীর-
তার প্রেমের কি মূল্য আছে? 
পুরুষরূপী নির্জীবে কি ভালোবাসা, 
যেথায় নারী মূল্যহীন ভোগ বিলাসা। 
সন্দেহেতে বাৎসলেরে করিল পরিত্যাগ, 
আদৌ সে কি পিতৃদেব 
সন্তানেতে কি আছে অনুরাগ? 
যে পুরুষ সন্দেহে যায় হেরে, 
স্ত্রীরে পাঠায় ধরণী মাতৃ ক্রোরে| 
মূর্খ সমাজ তারে 
করিছে পূজা যুগান্তরে| 
সেই পুরুষটি চিরদাহ্য, 
নারীরে দেয় সম্মান। 
বিক্ষুব্ধ নারীর মিথ্যা সংস্কারে, 
তারেই করে অন্ধজনে অপমান| 

তোমরা ভাই রামকেই নিও 
তারেই দেবতার আসনে বসিও| 
আমায় বরং রাবণ দিও|
আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি তারি চরণে, 
পূজার ফুল বর্ষিত হোক আমরণে।

কোমল হৃদয় যার, 
নারীতে সমবেদনশীল, 
লম্পটে বিরূপ চেতনা 
নারীতে রুচিশীল। 
প্রতারণা সত্বেও সে হেরে যায়নি, 
আভিজাত্যে স্থির দীর্ঘ সাহস নিয়ে। 
তোমাদের চোখে দাম্ভিক সে,
কুর্নিশ জানাই নতজানু হয়ে।
 
কেন তারে তকমা দিল অসুর নামে? 
অসুরের কি দোষ আছে তার।
অসুর হয়ে ও অসুর হলো না সে, 
দেবতা রূপে হল আত্মপ্রকাশ তার।

গর্ব তার চরিত্রে বিরাজে, 
তাহার দর্প-তার স্বত্তায়। 
তার হুংকারে তার অহংকার।
অহংকার বহ্নিল রুচিশীলতায়।
পুরুষোত্তম না হোক তোমার কাছে,
সেরা পুরুষ সে আমার কাছে |
মানায় তারে মহাপুরুষের সাজে
খলনায়ক হয়েও নায়ক মহিশুর,  
রাবণ দহন, লেহন মাত্র। 
অসুর হলে তার দেবতার রূপ,
চিত্তে মম রাবণ পুরুষোত্তম,
ব্যর্থতা তার সকল ই বিদ্রুপ।

কলমে কবি মোঃ কামাল উদ্দিন।
------------------
সাহিত্য লহরীতে আপনাদের সকলকে স্বাগতম।
------------------



বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

বৃষ্টিপরী-Poem by Md Kamaluddin.

বৃষ্টিপরী-নৈস্বর্গিক প্রকৃতির কবিতা।


বৃষ্টিপরী-

ঘুম ভেঙ্গেছে বৃষ্টি, 
তোমার মিষ্টি ডাকে, 
চোখ মেলেছি, 
মাটির সোঁদা গন্ধ নাকে। 
তুমি এসে বকুলতলার- 
সবুজ পাতার ফাঁকে, 
শিউলি গুলো সিক্ত তখন, 
তোমার স্নিগ্ধ হাঁকে। 
হর্ষ ভরা আশার আলো চোখে। 
কৃষক পথে, 
আদুলগায়ে বৃষ্টি সুখে। 
আয় বদলা রানি 
এ বছরের তরে। 
সোনার ফসল আসবে 
সবার ঘরে ঘরে।

 
ধূসর আকাশ, নীল সমীরন 
দুলছে শাখী পানসি পাতায়। 
টুপুর টাপুর মৃদু পরশ 
টোপর মাথায়। 
দুহাত তুলে আকাশ পানে 
তোমার গুনগান, 
জাগল হেথায়
সুপ্ত ভূমে নব প্রাণ। 


ঝিম ঝিম ঝিম বৃষ্টি গানে, 
উল্লাস জগৎময়। 
দামাল শিশু উঠল জেগে, 
উচ্ছল তন্ময়। 
বর্ষাতি তার অগোছালো 
বৃষ্টি সুখের ছন্দে। 
নৃত্য ছলে খেলার তালে
ছুটছে মহানন্দে। 
বাদল দিনে 
বৃষ্টি ঘেরা পাঠশালা।
পড়ার থেকে মুক্ত আজি, 
কাদার সাথে জল খেলা। 

পুকুর জলে বারিশ ছোঁয়া, 
মাছগুলো আজ উতলা।
পাল তুলেছে জলের তোরে
দমকা হাওয়ায় পাগলা।
 
অঝোর ধারার বদলা রানী, 
কখনো তার ঝিরঝিরানি। 
সূর্য মামা কখন যেন- 
দিচ্ছে উঁকি। 
রামধনুতে রঙ মেখেছে
তোমায় দেখি|

 
আকাশ কালো মেঘের সাথে,
বৃষ্টি পরীর ঝুমঝুমিতে, 
হাসছে খোকন মায়ের সাথে। 
তাকিয়ে থেকে আকাশ পানে।
বাদল দিনে মত্ত- 
শিশু আপন মনে|
 
রাখাল বালক মেষের পালে, 
বৃষ্টি ভেজা ধেনুর সাথে চলে। 
এলোমেলো খেলছে তারা, 
পাড়ার সকল ছেলে। 
নেইকো হুস ডিগবাজি ও খেলে। 
মাতলো সবে, বৃষ্টি আবার এলে। 

বৃষ্টি পরী! ঝগড়া নাহি, 
নাহি আড়ি-তোমার সাথে। 
তুমি আসলে মাতবো আবার, 
বৃষ্টি ভেজা সিক্ত পথে।

---------------------------------
কলমে কবি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।
------------------------------------------------

সাহিত্য লহরীতে আপনাদের সকলকে স্বাগতম।
-------------------

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

সাম্যবাদের আহ্বান-Poem by Md Kamaluddin.

সাম্যবাদ-সামাজিক চেতনার কবিতা।



সাম্যবাদের আহ্বান।

অনেক বছর পেরিয়ে গেছে, 
কদ্দিন আর বাকি আছে?
হিসাব করি অর্থ রাশি,
কুবেররূপী ধন পিয়াসী।
ছোটবেলার পুথি বিদ্যা, 
মগজ ভরা বিদ্যে মশায়। 
তার কিছুটা উপযোগে- 
যুদ্ধ জয়ে কাজ জোটায়। 
মাস গেলে যে পয়সা আসে,
দিন কেটে যায় ভালোমতে,
কি আর আহামরি তাতে।
বেহিসাবি কেনাকাটায় 
পকেট করি সাফাই। 
ভাবছি বটে কাটছে সময় 
কোনমতে আশা নিরাশায়। 
আদুল গায়ে ঘুরুক শিশু পাছে। 
তবু আমার সাজের বহর আছে। 
সকাল-বিকাল হাজার 
শিশু মরছে অনাহারে।
রসন তৃপ্ত ভুরিভোজে, 
মন্ডা মিঠাই চাই আমারে।
হাসপাতালে ভালো সেবা, 
আমার শুধু চাই। 
বাকি সবের মোড়ক এসে, 
মর্গে হোক ঠাই। 
ভোগ বিলাসী মানুষ 
সেরা প্রাণীকূলে,
তার অনেক কিছুই চাই। 


মানুষ থেকে মুখ ফিরায়ে, 
জগত পানে চায়।
গাছ গাছালি হরিৎ কুঞ্জে,
পাখির মিলন মধুর ঠাঁই।
পাখিগুলো জীবন ভর বেচে থাকে, 
নেইকো কোন তাদের টেনশন। 
চাকরি শেষে পাবো কত পেনশন- 
ভাবনাও নেই তার| 
তবে মানুষের কেন এত হাহাকার ? 
পৃথিবীতে আছে অনেক প্রজাতি। 
শুনেছি নাকি পচাশি লক্ষ্য জাতি। 
কেবলমাত্র মানুষ বাদে, 
সবাই আছে আনন্দে। 
মানুষ শুধু ছুটে মরে 
দিবানিশি নিরানন্দে। 

তিতলিরা সব উড়ছে, 
পাতার কোলে কোলে। 
খাবার তাদের ঠিক জুটে 
খাবার সময় হলে। 
ফুলগুলো সব হাসছে- 
চেয়ে আকাশ পানে। 
শিশির জমে বক্ষে তাদের, 
সোহাগ ভরা মধুর টানে। 
ঘাসফড়িং টা নাচছে, 
রঙ বেরঙের ডানা মেলে। 
খোশ মেজাজে মজার ছলে।
খাই খোরাকির তত্ত্ব ভুলে। 

মানুষ শুধুই হতভাগা, 
খুঁজে ফেরে সুখ ঠিকানা। 
সবার সময় আনন্দের, 
মানব জীবন শূন্য বালাখানা। 
পেটটা তাদের কতই বড়? 
সারা জীবন ছুটেই মরে। 
থাকতে তাদের আছে মানা, 
শান্ত নীড়ে আপন ঘরে। 
সব সময় ছুটছে তারা, 
আজ এখানে, কাল সেখানে। 
কষছে হিসাব নগদ রাশির, 
মরছে তারা টাকার টানে। 
বোঝেনা সে জীবন মানে। 

সব প্রাণীরা আনন্দে থাকে, 
খাদ্যের না হয় টান। 
তারা সবাই আপন তালে থাকে। 
নেই তো কোন পিছ টান।
তবে কেন ভাই, 
মানুষ জাতির এত দুর্দশা? 
মানুষ চায় সব কিছুতেই, 
আমার হোক দখল খাসা। 
এই নেশাতেই তুমিও ছোটো 
আমিও ছুটি ভাই। 
তারপরে যে দেখি, 
বঞ্চিত তোমার সন্তানটায়। 
ভুবুক্ষ সে পড়ে আছে 
পথের ধারে অনাদরে। 
লোভী তুমি, একদিন 
বঞ্চিত করেছ যারে, নির্বিকারে।
তোমার জমানো অর্থ রাশি,  
এসেছে যা পূঁজিপতির ঘরে। 
তুমি ও তখন নিঃস্ব, 
ওপারেতে গেছো চলে। 
তোমার সন্তান অনাহারী। 
এভাবেই মানুষ জাতি 
সর্বনাশের সংসারী। 
মানুষের এই নেশা যদি, 
মগজ থেকে যায় উড়ে।
দেখবে তখন মানুষ জাতি 
আছে সবার উপরে। 
সাম্য আর সম বন্টন, 
সব প্রাণীরই যেমন আছে। 
মানুষ যদি করতে পারে 
তারাও তখন ঠিক ই বাঁচে। 
মানুষের এই নেশা কাটছে কই? 
সেই কোন লক্ষ বছর আগেই, 
এই নেশাতেই মানুষ ডুবেছে, 
মানুষ এখনো ও মজে আছে। 
আমার ভাবনা আমি বলি। 
তোমার ভাবনায় তুমি চলো। 
তবে একবার দেখো ভেবে, 
সাম্যবাদ এর কথা বলো।

-----------------------------------------------
কলমে: কবি- মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন.
-----------------------------------------------

সাহিত্য লহরীতে আপনাদের সকলকে স্বাগতম।
----------------------------------------------

সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

বন্ধুত্ব-Poem by Md Kamaluddin.

বন্ধুত্ব- একটি পবিত্র সম্পর্কের কবিতা।


বন্ধুত্ব-

আপন মনে, একলা ক্ষণে, 
ভাবছো বসে উর্ধ্ব পানে। 
কে আছে মোর আপন জন? 
তখন তুমি ডেকো মোরে। 
রহিব যদিও যোজন দূরে, 
সঙ্গ দেবো তোমায়-
বন্ধুত্বের অঙ্গীকারে।

যদিও হাসাতে না পারি, 
হর্ষ ভরা সুখে। 
কাঁদবো যেন তোমার সাথে, 
তোমার ভাঙা বুকে।।

রাতের অন্ধকারে যখন, 
নিভতে মনের বাতি। 
নিদ্রা বিহীন চোখের পাতা, 
আমি হব তোমার স্বপন সাথী।

প্রাণ যদি হয় আনচান,
লাগছে না কিছুই ভালো। 
আপন বলে ডাকবে আমায়, 
ঘুচাবো তোমার সকল কালো। 
শর্তবিহীন  সঙ্গ দেবো তোমায়।

মন যদি চায় বলগা হীন 
দূরদেশেরই অশ্ব হতে। 
রুখব না তোমার গতি, 
ছুটব সমভাবে তোমার সাথে।

এমন দিনে ডাকলে আমায়, 
পেলে না সাড়া কোনো ও মতে। 
সেদিন তুমি এসো আমার কাছে, 
বিদায় নেওয়ার শেষ বেলাতে।

কলমে- কবি: মোঃ কামাল উদ্দিন।
--------------------
সাহিত্য নহরীতে সকলকে স্বাগতম।
-------------------

শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫

অশনি ডঙ্কা-একটি বিপ্লবী কবিতা। Poem by Md Kamaluddin.

অশনি ডঙ্কা-


হে! দুর্নিবার, দুর্দম।
ওঠো, জাগো, বাজাও দামামা,
অবিরাম হরদম।
বিপ্লবের প্রখর দিনে, 
বিপ্লবীর জনজীবনে, 
অশান্ত চিত্ত আজি ভয় শূণ্য যেথায়, 
লড়বো মোরা অধিকারের সত্তায়। 
মানুষ হয়ে মানুষের তরে, 
বিপ্লবের লৌহতপ্ত আকরে,
নাড়িয়ে দেবো বিশ্ব আজি, 
বিপ্লবেরই রক্তিম জোয়ারে। 
হাতুরি গাইতি চালায়ে যারা
গড়িছে তোমার ইমারত। 
তাদেরই হাড়ভাঙ্গা খাটুনিতে, 
তুমি মাপিতেছো মুনাফার অংক, 
তাদের বখরা রেখেছো তলানিতে। 
তাদের রক্তচোষা পাওনা গন্ডার 
হিসাব মিলাও খুবই সস্তার। 
তাদেরই করের অবদান, 
তাদেরই করেছো দান। 
তবে কেন তোমার সুনাম? 
হাজার মানুষ তোমারে, 
বিশ্বাসে দিয়েছে সিংহাসন। 
তাহারি উপর তোমারি অহংকার। 
তুমি হয়েছ আজি কেন দুঃশাসন? 
দিকে দিকে শুধুই আমিত্বের হুংকার। 
তিলে তিলে গড়ে তোলা জনসম্পদ, 
তাহারে হেলায় দিতেছ বিলায়ে। 
ধনী আরো ধনী হবে বিস্ময় প্রলয়ে। 
সোনার কেল্লা গড়িয়া শুধু আপন তরসে,  
অক্ষয় রহিবার স্বপন রহিবে না ভরসে।  
যাদেরই জন্য তুমি আজ সবার উঁচে,          
তাহারি রশির টানে নির্ঘাত পড়িবে নীচে।     
শৈশব গুলো জ্বলছে আজি,  
হিংসা আর ঘৃণার অনলে। 
বঞ্চিত আজ বিভ্রান্ত মানুষ গুলো, 
মিথ্যা আর বিভাজনের যাঁতাকলে।
একদিন তোমার ওই দর্প অহংকার, 
হারাবে অস্তিত্ব সেই দাবানলে। 
বিবেক ভরা বিবেকানন্দ 
মানিছো তোমারি গুরু, 
হিংসা আর ঘৃণা দিয়ে, 
তবে কেন তোমার শুরু। 
মনের অন্তর মলীন করে, 
আছে যারা স্বর্গ দুয়ারে। 
হে! বিপ্লবী ওঠো, জাগো, 
চুরমার করে দাও, 
তব বিপ্লবী হুংকারে। 
দিকে দিকে অনাচারের বিচারে 
চালাও কুঠার বিপ্লবী অভিসারে।

কলমে কবি-মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।
------------------------
সাহিত্য লহরীতে আপনাদের সকলকে স্বাগত।
-------------