জীবন প্রবাহী।
শেষ প্রহরে পেলাম তারে,
রিক্ততা আর শূন্য হাতে।
নিরবে নিশ্চুপে বইছে জীবন,
আঁকাবাঁকা চোরা পথে।
ব্যস্ত কলরব বিরত,
কোলাহল নিশ্চুপ চারদিক।
শূন্য হতাশার হাতছানি-
কখনো আলোয় চিকচিক।।
আশা, নিরাশা, প্রত্যাশা ধিক ধিক।
ক্ষণিকের বাঁচা, মরার ছোঁয়া ততোধিক।
বাঁচার প্রশস্তি খরকুটের ও তানে।
চলেছে সে মহাসংকটে মহারনে।
ক্ষেতের ওধারে কৃষাণ-
উঠতি ফসলের সবুজে।
সকাল ও সন্ধ্যায় সংগ্রামী শপথ,
জীবন বীনার কলতান কুঞ্জে কুঞ্জে।
হারে হিম, ললাটে নিঠুর তপন।
সাঁতানো বর্ষায়, বর্ষাতি মাথা
অনিশ্চিত বিন্যস্ত জীবন।।
ওই যে দূরে নগরীর,
বালাখানার বিদ্যুৎ ঝলকে।
নেচেছে রাজ পুরুষ,
মদীর তন্দ্রা পলকে পলকে।
ক্রুর হিসাব, চাওয়া-পাওয়ার সান্ত্বনা।
সবই যা আজি মিথ্যা ভাবনা।
বিশ্ব মানব ভাবে আমার জীবন।
যা কিছু হোক আমারই তো আপন।
আমার ইশারায় প্রবাহী সে শেষ নিঃশ্বাসে।
বুঁদে বুঁদ আছে বেহিসাবি সে বিশ্বাসে।।
নিশ্চয়ই আছে এ প্রত্যয়।
সবই সৃজনের আছে যে ক্ষয়।।
একদিন সব কিছু ছেড়ে মায়া ভুলে।।
যাবে সে একাকী সেই মহাদুল্যকে।
তখনই আসিবে সে, বোঝবার পালা
জীবন পাখি উড়ে গেছে,
ভেঙেছে সকল তালা।
স্বপ্ন সবই দুঃস্বপ্ন ত্যাজে।
তোমাতেই রাহি, ত্রাহী নিনাদ ও রাজে।
কি হলো? কত কিছু সাধলাম,
আপনার বলে বাঁধলাম।
রাখলাম সকলের থেকে ছিঁড়ে ছুঁড়ে।
কত ঝনঝাট রাতে দিনে মাথা কুঁড়ে কুঁড়ে।
তোমাতেই শান্তরহে,
জাতির যাতনা সহে।
আপনারই কানছা খুলে ।
সকল হিংসা, মোহ, মত্ততা ভুলে।
সেদিন ও ভূকম্পনে বালাখানা লুন্ঠনে,
অহং ভরা কায়া তার শেষ শয়নে।
ক্ষেতের চাষী আনলো হাসি,
স্বর্গ দ্বারে অন্ধকারে,
তোমায় জীবন অবিনাশী।।
ভালো-মন্দ জুযুধান সংগ্রাম,
নৃত্য প্রহরে প্রলয় উদাম,
উদ্বেলিত অকারণ।
শেষ আলের ওপারে,
উবাচিত কন্ঠ নিঃশেষিত স্বপ্ন বিহারে।
স্বপ্নহীন শায়িত শয়নে,
অপলক নিশ্চুপ নয়নে।
জীবন হেথায় পূর্ণতা পায়,
শূন্যের অন্তহীন মহিমায়।
জীবন্ এত সহজ নয়,
নিরবে নিশ্চুপে বয়।
লেখক ও কবি-মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন।
-------------
সমাপ্ত।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন